361 – أَخْبَرَنَا الْحَسَنُ بْنُ سُفْيَانَ الشَّيْبَانِيُّ، وَالْحُسَيْنُ بْنُ عَبْدِ اللَّهِ الْقَطَّانُ بِالرَّقَّةِ، وَابْنُ قُتَيْبَةَ، وَاللَّفْظُ لِلْحَسَنِ، قَالُوا: حَدَّثَنَا إِبْرَاهِيمُ بْنُ هِشَامِ بْنِ يَحْيَى بْنِ يَحْيَى الْغَسَّانِيُّ، قَالَ: حَدَّثَنَا أَبِي، عَنْ جَدِّي، عَنْ أَبِي إِدْرِيسَ الْخَوْلَانِيِّ، عَنْ أَبِي ذَرٍّ، قَالَ: دَخَلْتُ الْمَسْجِدَ، فَإِذَا رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ، جَالِسٌ وَحْدَهُ، قَالَ: «يَا أَبَا ذَرٍّ إِنَّ لِلْمَسْجِدِ تَحِيَّةً، وَإِنَّ تَحِيَّتَهُ رَكْعَتَانِ، فَقُمْ فَارْكَعْهُمَا»، قَالَ: فَقُمْتُ فَرَكَعْتُهُمَا، ثُمَّ عُدْتُ فَجَلَسْتُ إِلَيْهِ، فَقُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، إِنَّكَ أَمَرْتَنِي بِالصَّلَاةِ، فَمَا الصَّلَاةُ؟، قَالَ: «خَيْرُ مَوْضُوعٍ، اسْتَكْثِرْ أَوِ اسْتَقِلَّ»،
হযরত আবু যর (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, আমি মাছজিদে প্রবেশ করলাম। সৌভাগ্যক্রমে (সেখানে) হযরত রসূলুল্লাহ (স.) একাকী বসেছিলেন। তিনি (স.) বললেন, হে আবু যর! মাছজিদের জন্য অভিবাদন আছে আর মাছজিদের অভিবাদন হল দুই রাকাত সালাত। কাজেই তুমি উঠ ও দুই রাকাত সালাত আদায় কর। হযরত আবু যর (রা.) বলেন, আমি উঠলাম ও দুই রাকাত সালাত আদায় করলাম। এরপর আমি ফিরে আসলাম ও তাঁর (স.) কাছে বসলাম। অতঃপর আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) আপনি আমাকে সালাতের আদেশ দিয়েছেন, এই সালাত কী? তিনি বললেন, এটি ইবাদাতের মধ্যে সর্বোত্তম জিনিস। তুমি তা বেশি আদায় কর আর কম আদায় কর।
قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَيُّ الْعَمَلِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: «إِيمَانٌ بِاللَّهِ، وَجِهَادٌ فِي سَبِيلِ اللَّهِ»، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ الْمُؤْمِنِينَ أَكْمَلُ إِيمَانًا؟، قَالَ: «أَحْسَنُهُمْ خُلُقًا» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ الْمُؤْمِنِينَ أَسْلَمُ؟، قَالَ: «مَنْ سَلِمَ النَّاسُ مِنْ لِسَانِهِ وَيَدِهِ»، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ الصَّلَاةِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: «طُولُ الْقُنُوتِ»،
হযরত আবু যর (রা.) বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন আমল সর্বোত্তম? তিনি বললেন, আল্লাহর উপর ঈমান আনা ও আল্লাহর রাস্তায় জিহাদ করা। হযরত আবু যর বলেন, আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন ঈমানদারের ঈমান পরিপূর্ণ? তিনি বললেন, যার আখলাক অতি সুন্দর। আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন ঈমানদার (পরিপূর্ণভাবে) ইছলাম গ্রহণ করেছে? তিনি বললেন যার হাত ও মুখ হতে অন্য মানুষ নিরাপদ থাকে। তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন সালাত উত্তম? তিনি বললেন (ধীর-স্থীরতার সাথে) দীর্ঘ সালাত।
قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ الْهِجْرَةِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: «مَنْ هَجَرَ السَّيِّئَاتِ»، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَمَا الصِّيَامُ؟، قَالَ: «فَرْضٌ مُجْزِئٌ، وَعِنْدَ اللَّهِ أَضْعَافٌ كَثِيرَةٌ»، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ الْجِهَادِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: «مَنْ عُقِرَ جَوَادُهُ، وَأُهْرِيقَ دَمُهُ»، قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ الصَّدَقَةِ أَفْضَلُ؟، قَالَ: «جَهْدُ الْمُقِلِّ يُسَرُّ إِلَى فَقِيرٍ»
তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন হিজরাত সর্বোত্তম? তিনি (স.) বললেন, যে তার সকল গোনাহ পরিত্যাগ করেছে। তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) সওম কী? তিনি (স.) বললেন, ফরজ রোজাই যথেষ্ট, আর আল্লাহ তায়ালার কাছে আছে তার জন্য অনেকগুণ পুরষ্কার। তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন জিহাদ সর্বোত্তম? তিনি (স.) বললেন, (জিহাদে) যার ঘোড়ার পা কেটে দেওয়া হয়েছে এবং তার রক্ত প্রবাহিত হয়েছে। তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) কোন সদকা সর্বোত্তম? তিনি (স.) বললেন স্বল্প সম্পদের মালিকের দান যা ফকীরকে খুশি করে।
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَأَيُّ مَا أَنْزَلَ اللَّهُ عَلَيْكَ أَعْظَمُ؟، قَالَ: «آيَةُ الْكُرْسِيِّ» ثُمَّ، قَالَ: «يَا أَبَا ذَرٍّ، مَا السَّمَاوَاتُ السَّبْعُ مَعَ الْكُرْسِيِّ إِلَّا كَحَلْقَةٍ مُلْقَاةٍ بِأَرْضٍ فَلَاةٍ وَفَضْلُ الْعَرْشِ عَلَى الْكُرْسِيِّ كَفَضْلِ الْفَلَاةِ عَلَى الْحَلْقَةِ»،
আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) আল্লাহ তায়ালা আপনার উপর যা নাযিল করেছেন তার মধ্যে মহান (আয়াত) কোনটি? তিনি (স.) বললেন, আয়াতুল কুরছী? তিনি বললেন, হে আবু যর! সপ্ত আছমানে যা কিছু আছে কুরছীর সাথে তার তুলনা প্রশস্ত মরুভূমিতে একটি নিক্ষিপ্ত আংটি ছাড়া আর কিছুই নয়। আর আরশের ফজিলাত (বড়ত্ব) কুরছীর উপর এমন যেমন আংটির উপর বিস্তির্ণ মরুভূমির ফজিলাত (বড়ত্ব)
قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَمِ الْأَنْبِيَاءُ؟، قَالَ: «مِائَةُ أَلْفٍ وَعِشْرُونَ أَلْفًا» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَمِ الرُّسُلُ مِنْ ذَلِكَ؟، قَالَ: «ثَلَاثُ مِائَةٍ وَثَلَاثَةَ عَشَرَ جَمًّا غَفِيرًا»،
তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) আম্বিয়া (আ.)গণের সংখ্যা কত? তিনি (স.) বললেন, এক লক্ষ বিশ হাজার। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) তার মধ্য হতে রসূল কত জন? তিনি বললেন, তিন শত তের জন।
قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَنْ كَانَ أَوَّلُهُمْ؟، قَالَ: «آدَمُ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَنَبِيٌّ مُرْسَلٌ؟، قَالَ: «نَعَمْ، خَلَقَهُ اللَّهُ بِيَدِهِ، وَنَفَخَ فِيهِ مِنْ رُوحِهِ، وَكَلَّمَهُ قِبَلًا» ثُمَّ، قَالَ: يَا «أَبَا ذَرٍّ أَرْبَعَةٌ سُرْيَانِيُّونَ: آدَمُ، وَشِيثُ، وَأَخْنُوخُ وَهُوَ إِدْرِيسُ، وَهُوَ أَوَّلُ مَنْ خَطَّ بِالْقَلَمِ، وَنُوحٌ وَأَرْبَعَةٌ مِنَ الْعَرَبِ: هُودٌ، وَشُعَيْبٌ، وَصَالِحٌ، وَنَبِيُّكَ مُحَمَّدٌ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ»
তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) তাদের মধ্য হতে সর্ব প্রথম কে? তিনি (স.) বললেন, হযরত আদম (আ.)। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) তিনি কি প্রেরিত নবী? তিনি (স.) বললেন হ্যাঁ। আল্লাহ তায়ালা নিজ হাতে তাকে সৃষ্টি করেছেন আর তার মধ্যে ফুঁকে দিয়েছেন তাঁর রূহ। আর তার সাথে সামনা সামনি কথা বলেছেন। এরপর তিনি (স.) বললেন হে আবু যর! চারজন নবী হলেন ছুরইয়ানী: (১) হযরত আদম (আ.), (২) হযরত শীছ (আ.), (৩) হযরত আখনুখ যিনি হলেন হযরত ইদরীছ (আ.) আর তিনিই প্রথম কলমের সাহায্যে লিখেছিলেন। (৪) হযরত নূহ (আ.)।
চারজন নবী হলেন আরবী (১) হযরত হুদ (আ.), (২) হযরত শুয়াইব (আ.), (৩) হযরত সালেহ (আ.) ও (৪) তোমার নবী হযরত মুহাম্মাদ সল্লাল্লাহু আলাইহি ও ছাল্লাম।
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، كَمْ كِتَابًا أَنْزَلَهُ اللَّهُ؟، قَالَ: «مِائَةُ كِتَابٍ، وَأَرْبَعَةُ كُتُبٍ، أُنْزِلَ عَلَى شِيثٍ خَمْسُونَ صَحِيفَةً، وَأُنْزِلَ عَلَى أَخْنُوخَ ثَلَاثُونَ صَحِيفَةً، وَأُنْزِلَ عَلَى إِبْرَاهِيمَ عَشَرُ صَحَائِفَ، وَأُنْزِلَ عَلَى مُوسَى قَبْلَ التَّوْرَاةِ عَشَرُ صَحَائِفَ، وَأُنْزِلَ التَّوْرَاةُ وَالْإِنْجِيلُ وَالزَّبُورُ وَالْقُرْآنُ»،
আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) আল্লাহ তায়ালা কতগুলো কিতাব নাযিল করেছেন? তিনি (স.) বললেন, একশত ছোট কিতাব (সহীফা) ও চারখানা বড় কিতাব। হযরত শীছ (আ.) এর উপর পঞ্চাশ খানা সহীফা নাযিল হয়, হযরত আখনুখ (আ.) এর উপর ত্রিশ খানা সহীফা নাযিল হয়, হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর উপর দশ খানা সহীফা নাযিল হয়, তাওরাত নাযিলের পূর্বে হযরত মূছা (আ.) এর উপর দশ খানা সহীফা নাযিল হয়। এছাড়া তাওরাত, ইঞ্জিল,যাবুর ও কুরআন নাযিল করা হয়।
قَالَ: قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، مَا كَانَتْ صَحِيفَةُ إِبْرَاهِيمَ؟، قَالَ: «كَانَتْ أَمْثَالًا كُلُّهَا: أَيُّهَا الْمَلِكُ الْمُسَلَّطُ الْمُبْتَلَى الْمَغْرُورُ، إِنِّي لَمْ أَبْعَثْكَ لِتَجْمَعَ الدُّنْيَا بَعْضَهَا عَلَى بَعْضٍ، وَلَكِنِّي بَعَثْتُكَ لِتَرُدَّ عَنِّي دَعْوَةَ الْمَظْلُومِ، فَإِنِّي لَا أَرُدُّهَا وَلَوْ كَانَتْ مِنْ كَافِرٍ، وَعَلَى الْعَاقِلِ مَا لَمْ يَكُنْ مَغْلُوبًا عَلَى عَقْلِهِ أَنْ تَكُونَ لَهُ سَاعَاتٌ: سَاعَةٌ يُنَاجِي فِيهَا رَبَّهُ، وَسَاعَةٌ يُحَاسِبُ فِيهَا نَفْسَهُ، وَسَاعَةٌ يَتَفَكَّرُ فِيهَا فِي صُنْعِ اللَّهِ، وَسَاعَةٌ يَخْلُو فِيهَا لِحَاجَتِهِ مِنَ الْمَطْعَمِ وَالْمَشْرَبِ، وَعَلَى الْعَاقِلِ أَنْ لَا يَكُونَ ظَاعِنًا إِلَّا لِثَلَاثٍ: تَزَوُّدٍ لِمَعَادٍ، أَوْ مَرَمَّةٍ لِمَعَاشٍ، أَوْ لَذَّةٍ فِي غَيْرِ مُحَرَّمٍ، وَعَلَى الْعَاقِلِ أَنْ يَكُونَ بَصِيرًا بِزَمَانِهِ، مُقْبِلًا عَلَى شَأْنِهِ، حَافِظًا لِلِسَانِهِ، وَمَنْ حَسَبَ كَلَامَهُ مِنْ عَمَلِهِ، قَلَّ كَلَامُهُ إِلَّا فِيمَا يَعْنِيهِ»
তিনি বলেন, আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) হযরত ইব্রাহীম (আ.) এর সহীফায় কী ছিল। তিনি (স.) বললেন, তার সবটাই উপমায় ভরা ছিল। যেমন, হে ক্ষমতাধর, দাম্ভিক শাসক! আমি তোমাকে একে অপরের উপর দুনিয়া জমা করার জন্য প্রেরণ করিনি। বরং আমি তোমাকে প্রেরণ করেছি মাজলুমের দোয়া আমার কাছে আসতে প্রতিহত করার জন্য। কারণ আমি মাজলুমের দোয়া ফিরিয়ে দেই না যদিও সে কাফির হয়। বিবেকবানদের যতক্ষণ পর্যন্ত তার বিবেক স্বাভাবিক থাকে তার জন্য আবশ্যক হল কয়েকটি সময়কে গুরুত্ব দেওয়া। একটি সময়ে সে তার রবের কাছে নাজাত চাবে। একটি সময়ে সে তার নিজের ব্যাপারে হিসাব করবে। একটি সময়ে সে আল্লাহর সৃষ্টি নিয়ে চিন্তা ভাবনা করবে। একটি সময়ে সে খানা পিনার জন্য অবসর হবে। বিবেকবানের জন্য আবশ্যক হল তিনটি জিনিস ব্যতীত অন্য জিনিসের চেষ্টায় লিপ্ত না হওয়া। (১) আখিরাতের সম্বল সংগ্রহ করা, (২) জীবনোপকরণের চেষ্টা করা, (৩) হালাল বস্তুর মধ্যে মজা আস্বাদন করা। বিবেকবানের জন্য আবশ্যক হল নিজ যামানায় (হায়াতে) সূক্ষ্মদর্শী হওয়া — জবানকে হিফাজাত করা। যে তার কথা কাজের হিসাব করে। আবশ্যক (প্রয়োজনীয়) কথা ব্যতীত তার কথা কম হয়।
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، فَمَا كَانَتْ صُحُفُ مُوسَى؟، قَالَ: «كَانَتْ عِبَرًا كُلُّهَا: عَجِبْتُ لِمَنْ أَيْقَنَ بِالْمَوْتِ، ثُمَّ هُوَ يَفْرَحُ، وَعَجِبْتُ لِمَنْ أَيْقَنَ بِالنَّارِ، ثُمَّ هُوَ يَضْحَكُ، وَعَجِبْتُ لِمَنْ أَيْقَنَ بِالْقَدَرِ ثُمَّ هُوَ يَنْصَبُ، عَجِبْتُ لِمَنْ رَأَى الدُّنْيَا وَتَقَلُّبَهَا بِأَهْلِهَا، ثُمَّ اطْمَأَنَّ إِلَيْهَا، وَعَجِبْتُ لِمَنْ أَيْقَنَ بِالْحِسَابِ غَدًا ثُمَّ لَا يَعْمَلُ»
আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) হযরত মূছা (আ.) এর সহীফায় কী ছিল? তিনি (স.) বললেন, তা অভিজ্ঞতা প্রসূত কথায় ভরা ছিল। (১) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর যে মৃত্যুকে বিশ্বাস করে অতঃপর কি করে আনন্দিত হয়। (২) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর জাহান্নামকে বিশ্বাস করে এরপর কিভাবে হাসে। (৩) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর যে ভাগ্যে বিশ্বাস করে অতঃপর সে নিজেকে কষ্ট ক্লেশে নিপতিত করে (৪) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর যে দুনিয়া ও তার অধিবাসিদের পরিণতি দেখে তারপর সে কি করে তার উপর ইতমিনান হয়। (৫) আমার আশ্চর্য লাগে ঐ ব্যক্তির উপর যে হিসাবকে বিশ্বাস করে অতপর তার জন্য আমল করে না।
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، أَوْصِنِي، قَالَ: «أُوصِيكَ بِتَقْوَى اللَّهِ، فَإِنَّهُ رَأْسُ الْأَمْرِ كُلِّهِ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، زِدْنِي، قَالَ: «عَلَيْكَ بِتِلَاوَةِ الْقُرْآنِ، وَذِكْرِ اللَّهِ، فَإِنَّهُ نُورٌ لَكَ فِي الْأَرْضِ، وَذُخْرٌ لَكَ فِي السَّمَاءِ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، زِدْنِي:، قَالَ: «إِيَّاكَ وَكَثْرَةَ الضَّحِكِ، فَإِنَّهُ يُمِيتُ الْقَلْبَ، وَيَذْهَبُ بِنُورِ الْوَجْهِ»
আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) আমাকে দয়া করে উপদেশ দান করুন। তিনি বললেন, আমি তোমাকে আল্লাহকে ভয় করার উপদেশ দিচ্ছি কারণ তা সকল কাজের চূড়া। আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো কিছু উপদেশ দান করুন। তিনি (স.) বললেন তুমি অবশ্যই কুরআন তিলাওয়াত ও যিকির করবে কারণ তা জমীনে তোমার জন্য নূর আর আছমানে তোমার জন্য সঞ্চিত ধন। আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো উপদেশ দান করুন। তিনি (স.) বললেন অধিক হাসি থেকে সাবধান থাকো। কারণ অধিক হাসি কলবকে মেরে ফেলে চেহারার নূরকে দুরীভূত করে।
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، زِدْنِي، قَالَ: «عَلَيْكَ بِالصَّمْتِ إِلَّا مِنْ خَيْرٍ، فَإِنَّهُ مَطْرَدَةٌ لِلشَّيْطَانِ عَنْكَ، وَعَوْنٌ لَكَ عَلَى أَمْرِ دِينِكَ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، زِدْنِي، قَالَ: «عَلَيْكَ بِالْجِهَادِ، فَإِنَّهُ رَهْبَانِيَّةُ أُمَّتِي» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ، زِدْنِي، قَالَ: «أَحِبَّ الْمَسَاكِينَ وَجَالِسْهُمْ» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ زِدْنِي، قَالَ: «انْظُرْ إِلَى مَنْ تَحْتَكَ وَلَا تَنْظُرْ إِلَى مَنْ فَوْقَكَ، فَإِنَّهُ أَجْدَرُ أَنْ لَا تُزْدَرَى نِعْمَةُ اللَّهِ عِنْدَكَ»
আমি বললাম, ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো উপদেশ দান করুন। তিনি (স.) বললেন ভালো কথা ছাড়া তুমি চুপ থাকবে। কারণ কম কথা তোমার থেকে শয়তানকে বিতাড়িত করবে আর দ্বীনি বিষয়ে তোমার সাহায্যকারী হবে। আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো কিছু উপদেশ দান করুন। তিনি (স.) বললেন, তোমার জন্য জিহাদ অপরিহার্য; কারণ আমার উম্মতের জন্য বৈরাগ্য হল জিহাদ। আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো উপদেশ দান করুন। তিনি (স.) বললেন তুমি তোমার চেয়ে নীচের লোকদের দিকে তাকাবে, তোমার চেয়ে উপরের লোকদের দিকে তাকাবে না। কেননা এর দ্বারা তোমার পক্ষ থেকে আল্লাহর নেয়ামতের চুচ্ছজ্ঞান প্রকাশ পাবে না।
قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ زِدْنِي، قَالَ: «قُلِ الْحَقَّ وَإِنْ كَانَ مُرًّا» قُلْتُ: يَا رَسُولَ اللَّهِ زِدْنِي، قَالَ: «لِيَرُدَّكَ عَنِ النَّاسِ مَا تَعْرِفُ مِنْ نَفْسِكَ وَلَا تَجِدْ عَلَيْهِمْ فِيمَا تَأْتِي، وَكَفَى بِكَ عَيْبًا أَنْ تَعْرِفَ مِنَ النَّاسِ مَا تَجْهَلُ مِنْ نَفْسِكَ، أَوْ تَجِدَ عَلَيْهِمْ فِيمَا تَأْتِي» ثُمَّ ضَرَبَ بِيَدِهِ عَلَى صَدْرِي، فقَالَ: «يَا أَبَا ذَرٍّ لَا عَقْلَ كَالتَّدْبِيرِ، وَلَا وَرَعَ كَالْكَفِّ، وَلَا حَسَبَ كَحُسْنِ الْخُلُقِ».— ابن حبان
আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো উপদেশ দান করুন। তিনি বললেন, সত্য কথা বলবে; যদিও তা তিক্ত (অপছন্দনীয়) হয়। আমি বললাম ইয়া রসূলাল্লাহ (স.) দয়া করে আমাকে আরো উপদেশ দান করুন। তিনি (স.) বললেন, তোমার নিজের সম্পের্কে অবহিতি যেন অন্যের দোষ খোঁজা থেকে বিরত রাখে। আর তুমি যে কাজ কর তা অন্যের মধ্যে দেখলে রাগান্বিত হয়ো না। আর তোমার জন্য বড় দোষণীয় যে, তোমার ব্যাপারে যা তুমি জাননা তা মানুষের মাঝে খুঁজতে যাও। অথবা তুমি যে কাজ কর তা মানুষের মাঝে দেখলে রাগান্বিত হও। অতঃপর তিনি তার হাত দিয়ে আমার বুকের উপর মারলেন এবং বললেন, হে আবু যার! তদবীর বা পরিণাম দর্শিতার মত কোনো জ্ঞান নেই। নিবৃত থাকার মত কোন আল্লাহ ভীতি নেই। এবং উত্তম চরিত্রের মত কোন আভিজাত্য নেই।
সহীহ ইবনে হিব্বান, হাদীস নং ৩৬১