(১ম পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন) (২য় পর্ব পড়তে এখানে ক্লিক করুন)
(দুই) এই উপমহাদেশের প্রচলিত পোশাকের চেয়ে ইছলামের কর্ণধারদের এই পোশাক ছিল বেশি শালীন, মার্জিত ও রুচিশীল।
(তিন) ইছলামী পোশাক বলে কি আসলে কিছু নেই?
আল্লাহ তায়ালা বলেন, আল ইয়াওমা
{ الْيَوْمَ أَكْمَلْتُ لَكُمْ دِينَكُمْ وَأَتْمَمْتُ عَلَيْكُمْ نِعْمَتِي وَرَضِيتُ لَكُمُ الإسْلامَ دِينًا } هذه أكبر نعم الله ، عز وجل، على هذه الأمة حيث أكمل تعالى لهم دينهم ، فلا يحتاجون إلى دين غيره، ولا إلى نبي غير نبيهم، صلوات الله وسلامه عليه؛ ولهذا جعله الله خاتم الأنبياء، وبعثه إلى الإنس والجن، فلا حلال إلا ما أحله، ولا حرام إلا ما حرمه، ولا دين إلا ما شرعه، وكل شيء أخبر به فهو حق وصدق لا كذب فيه ولا خُلْف {ابن كثير}
এটা উম্মাতে মুহাম্মাদীয়ার (স.) প্রতি আল্লাহর মহান নি’আমাত। এই হিসাবে যে, তিনি এই উম্মাতের জীবন বিধানকে পরিপূর্ণতা দান করেছেন, যার ফলে তারা অন্য বিধানের মুখাপেক্ষি নয়। এমনিভাবে তিনি তাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে খাতামুন্নাবী বা সর্বশেষ নবী করেছেন, অন্য কোন নবীর মুখাপেক্ষি করেননি। আর তাদের নবীকে সমগ্র মানব ও জ্বীন জাতি তথা বিশ্ববাসীর নবী করে পাঠিয়েছেন। তিনি যা কিছুই হালাল করেছেন সেটাই হালাল এবং যা কিছু হারাম করেছেন সেটাই হারাম। তিনি যে দ্বীনকে প্রবর্তন করেছেন ওটাই একমাত্র দ্বীন এবং তিনি যে সংবাদ প্রদান করেছেন ওটা ন্যায় ও সত্য তাতে বিন্দুমাত্র মিথ্যা বা বৈপরিত্য নেই। (ইবনে কাছীর)
ইছলাম একটি পূর্ণাঙ্গ ধর্ম। এটাতে কোন কিছু বাকি নেই। বাইরে থেকে কিছু নিতে হবে না। প্রতিটি জাতির জন্য পোশাক একটি বিশেষ ইউনিফর্ম। পোশাকের মাধ্যমে কোন জাতীর সভ্যতা, রুচিবোধ প্রকাশ পায়। এমন একটা বিষয়ে ইছলামে কোন দিক নির্দেশনা থাবে না, এটা হতে পারে না। উল্লেখ্য, ইছলামী পোশাক মানেই তা ওয়াজিব-সুন্নাত হতে হবে বিষয়টা মনে হয় এমন নয়। ইছলামের যিনি পথ প্রদর্শক, যার দ্বারাই আল্লাহ তায়ালা ইছলামকে পূর্ণতা দান করেছেন তিনি যে পোশাক পরেছেন বা পছন্দ করেছেন (চাই তা অভ্যাসগতভাবে হোক আর ভৌগলিক ও পরিবেশগতভাবে হোক) তাঁর (স.) অনুসরণে যারা সেই পোশাককে অবলম্বন করেছেন, এখনও পর্যন্ত যারা দ্বীনকে নিয়েই পথ চলছেন তাদের অনুসৃত পোশাককে যদি কেউ মুসলিম পোশাক বা ইছলামী পোশাক বলে তবে মনে হয় তা অপ্রাসাঙ্গিক হবে না বরং বলাটা যথাযথ হবে। খ্রীষ্টানরা যে পোশাক ব্যবহার করেন এই পোশাকটা হযরত ঈসা (আ.) পরেছিলেন এটা কোন ইতিহাস সাক্ষ্য দেয় না। আবার হিন্দুরা যে ধুতি ব্যবহার করেন সেটা যে তাদের ধর্মের প্রবর্তকগণ ব্যবহার করেছেন এটারও কোন প্রমাণ নেই। তারপরও হিন্দু সাধকগণ গ্রহণ করার করণে ধুতি যদি হিন্দুদের ধর্মীয় পোশাক হতে পারে, খ্রীষ্টান যাজকগণ গ্রহণ করার কারণে তাদের নির্দিষ্ট পোশাককে যদি খ্রীষ্টানদের পোশাক বলা যেতে পারে, তবে প্রমাণসহ আমাদের নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম যে পোশাক ব্যবহার করেছেন এবং তাঁর (স.) অনুসারীগণ যা অনুসরণ করেছেন সেটাকে কেন মুসলিম পোশাক বলা যাবে না! বিষয়টি তলিয়ে দেখার জন্য করজোড়ে অনুরোধ করছি।
প্রাথমিক, মাধ্যমিক (এস,এস,সি), উচ্চমাধ্যমিক (এইচ,এস,সি), স্নাতক (ডিগ্রী/অনার্স) ও স্নাতকোত্তর (মাষ্টার্স) শ্রেণিতে যে সকল সমাজ বিজ্ঞানের বই আছে সেখানে বিভিন্ন ধর্মের পোশাকের ছবি আছে। সেখানে খোঁজ করার অনুরোধ করছি। আপনি সেখানে বর্ণনাসহ ছবি দেখতে পাবেন। সেখানে সমাজ বিজ্ঞানীগণ পায়জামা-পাঞ্জাবী, টুপিকে ইছলামী পোশাক বলেই স্বীকার করে নিয়েছেন। কাজেই শুধু ওয়াজিব-সুন্নাতের কথা উল্লেখ করে ইছলামে কোন পোশাক নেই ইত্যাদি বলে সমাজ তথা ইছলামকে কলুষিত করা ঠিক হবে না।
প্যান্ট-শার্ট বিশেষ পর্যায়ে না যাওয়া পর্যন্ত কেউ তাকে ঢালাওভাবে নাজায়িয বলেন না। আপনার মন চায় ব্যবহার করেন। তাই বলে যারা নবী প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে হাছান (উত্তম) পোশাককে ব্যবহার করছেন তাদেরকে প্যান্ট-শার্টের অনুসারী করে উত্তম পোশাক থেকে দূরে রাখার জন্য এত প্রচেষ্টা কেন? লম্বা জামা, টুপি, পাগড়িকে ভৌগলিক পোশাক, আঞ্চলিক পোশাক, পরিবেশগত পোশাক বলে এই পোশাকের প্রতি সাধারণ মানুষকে নিরুৎসাহিত ও ঘৃণার সৃষ্টি করে দেওয়ার কারণ কী? ঠিক একই যুক্তি তুলে ধরে প্যান্ট-শার্টের প্রতি সাধারণকে সতর্ক করার কোন চেষ্টা-সাধনাতো দেখা যায় না!
সভ্য মানুষ হিসাবে বসবাস করতে গেলে প্রত্যেককে কোন না কোন পোশাক গ্রহণ করতেই হয়। পোশাক গ্রহণের ক্ষেত্রে মানুষ বিভিন্ন নির্ণায়ক নির্ধারণ করে থাকে। যেমন,
(ক) ধর্মীয় নেতার অনুসরণ, (খ) রাজনৈতিক নেতার অনুসরণ, (গ) খেলোয়াড়ের অনুসরণ, (ঘ) চিত্রজগতের নায়ক-নায়িকা বা ভিলেনের অনুসরণ, (ঙ) কোন ধনীর অনুসরণ, (চ) প্রতারণা বা ধোঁকা দেওয়ার জন্য বিশেষ পোশাকের অনুসরণ, (ছ) মনের সখ পূরণের অনুসরণ।
আমাদেরকে এগুলোর মধ্য থেকে যে কোন একটাকে অনুসরণ করতেই হয়। প্রশ্ন হল, কাকে অনুসরণ করবো? হাদীছে আছে, যে যে জাতির অনুসরণ করবে সে সে জাতির অন্তর্ভূক্ত হবে। নিজেকে প্রশ্ন করি, আমি কোন শ্রেণির অন্তর্ভূক্ত হতে চাই? যদি খেলোয়াড়ের অনুসরণ করা হয় তবে তাদের দলভূক্ত হতে হবে আর যদি ধর্মীয় নেতার অনুসরণ করা হয় তবে তাদের দলভূক্ত হতে হবে। এটাই নিয়ম। নিজে নির্ধারণ করি, নিজ অবস্থান কোথায় রাখবো, কার দলভূক্ত হবো? এখানে জোর করারও কিছু নেই, জোরাজুরি করারও কিছু নেই। এই দলভূক্ত হওয়ার ব্যাপারটি দুনিয়ার নিয়মেও আছে। যেমন খেলার ক্ষেত্রে কেউ যদি আর্জেন্টিনার পোশাক পরে তবে লোকেরা তাকে আর্জেন্টিনার দলভূক্ত মনে করবে। চাকমাদের পোশাক পরলে চাকমাদের অন্তর্ভূক্ত মনে করবে, ধুতি পরলে হিন্দুদের মধ্যে গণ্য করবে। কেউ যদি কোন রাজনৈতিক নেতার পোশাক পরে তবে তাকে সেই রাজনৈতিক দলের অন্তর্ভূক্ত মনে করবে। যদি কেউ লম্বা জামা পাগড়ি টুপি পরেন তবে নিশ্চিতই লোকেরা তাকে মুসলমান বলে গণ্য করবে।
একটা বাস্তবতাঃ যদি প্যান্ট-শার্ট পরিহিত বেশ কিছু লোক একত্রিত হন তবে পোশাক দেখে কারো দ্বারা নির্ধারণ করা সম্ভব নয় যে, তারা কে কোন ধর্মের অনুসারী। এই অবস্থায় মৃত্যুবরণ করলে, নিঃসন্দেহে অবস্থা যথেষ্ট শোচনীয় হবে। পক্ষান্তরে যদি কোন ব্যক্তি ধুতি পরিহিত অবস্থায় মৃত্যুবরণ করেন তবে সাধারণ লোকও তাকে হিন্দুদের মধ্যে গণ্য করবেন। আবার যদি কেউ পায়জামা, টুপি, পাগড়ি পরিহিত অবস্থায় ইনতিকাল করেন তবে যে কেউই তাকে মুসলমানদের মধ্যে গণ্য করবেন।
কাজেই আপামর জনসাধারণ যে জাতিকে বা যাকে যে পোশাকে চিনে থাকে সেটাই সে জাতির পোশাক। অতএব মুসলিম বিশেষ করে “ধর্মের বিশেষ ব্যক্তিগণকে” আপামর জনসাধারণ যে পোশাকে চিনে থাকে সেই পোশাকই মুসলমান তথা ইছলামী পোশাক। এই পোশাক সংগায়িত করার জন্য আদেশ সূচক ক্রিয়ার প্রয়োজন হয় না। বরং আদেশ সূচক ক্রিয়া ফরয, ওয়াযিব, সুন্নাত নির্ধারণে প্রয়োজন হয়। উল্লেখ্য, প্যান্ট-শার্ট ইউরোপ তথা ইংরেজ যারা অধিকাংশ খ্রীষ্টান ছিলেন তাদের থেকে প্রচলন হলেও বর্তমানে এটা সকল ধর্মের লোক ব্যবহার করেন। প্যান্ট-শার্ট ইয়াহুদ বা খ্রীষ্টানদের পোশাক নয়, তাদের ধর্মীয় পোশাক আলাদা। তবে এটা সন্দেহাতীত ইংরেজদের পোশাক। প্রবর্তকগণ ছিলেন অমুসলিম।
যে যে জাতির অনুসরণ করবে সে সে জাতির অন্তর্ভূক্ত হবেঃ
আল্লাহর হাবীব সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পবিত্র হাদীছঃ
4031 – حَدَّثَنَا عُثْمَانُ بْنُ أَبِي شَيْبَةَ، حَدَّثَنَا أَبُو النَّضْرِ، حَدَّثَنَا عَبْدُ الرَّحْمَنِ بْنُ ثَابِتٍ، حَدَّثَنَا حَسَّانُ بْنُ عَطِيَّةَ، عَنْ أَبِي مُنِيبٍ الْجُرَشِيِّ، عَنِ ابْنِ عُمَرَ، قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ»
[حكم الألباني] : حسن صحيح
হযরত ইবনে ওমার (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, হযরত রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, যে ব্যক্তি কোন জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে সে তাদের দলভূক্ত হবে। {আবু দাউদ শরীফ, হাদীছ নং ৪০৩১, মুসনাদে আহমাদ, হাদীছ নং ৫১১৫, মুসনাদে বাজ্জার, হাদীছ নং ২৯৬৬, আল মু’জামুল আওসাত, হাদীছ নং ৮৩২৭, মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, হাদীছ নং ৩৩০১৬) আল জামিউস সহীহ লিসসুনানি ওয়াল মাছানিদ” কিতাবে التَّشَبُّهُ بِالْكُفَّارِ مِنَ الْكَبَائِر (কাফিরদের সাদৃশ্য রাখা কবীরা গোনাহের মধ্যে একটি” শিরোনামে হাদীছটি বর্ণিত হয়েছে)}
এক নজরে হাদীছটির সংক্ষিপ্ত তাশরীহঃ
তাশরীহ নং ১, মিরকাতুল মাফাতিহ, খণ্ড নং ৮, পৃষ্ঠা নং ১৫৫
4347 – (وَعَنْهُ) : أَيْ عَنِ ابْنِ عُمَرَ (قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ – (مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ) : أَيْ مَنْ شَبَّهَ نَفْسَهُ بِالْكُفَّارِ مَثَلًا فِي اللِّبَاسِ وَغَيْرِهِ، أَوْ بِالْفُسَّاقِ أَوِ الْفُجَّارِ أَوْ بِأَهْلِ التَّصَوُّفِ وَالصُّلَحَاءِ الْأَبْرَارِ. (فَهُوَ مِنْهُمْ) : أَيْ فِي الْإِثْمِ وَالْخَيْرِ. —هَذَا وَقَدْ حَكَى حِكَايَةً غَرِيبَةً وَلَطِيفَةً عَجِيبَةً، وَهِيَ أَنَّهُ لَمَّا أَغْرَقَ اللَّهُ – سُبْحَانَهُ – فِرْعَوْنَ وَآلَهُ لَمْ يُغْرِقْ مَسْخَرَتَهُ الَّذِي كَانَ يُحَاكِي سَيِّدَنَا مُوسَى – عَلَيْهِ الصَّلَاةُ وَالسَّلَامُ – فِي لُبْسِهِ وَكَلَامِهِ وَمَقَالَاتِهِ، فَيَضْحَكُ فِرْعَوْنُ وَقَوْمُهُ مِنْ حَرَكَاتِهِ وَسَكَنَاتِهِ ; فَتَضَرَّعَ مُوسَى إِلَى رَبِّهِ: يَا رَبِّ! هَذَا كَانَ يُؤْذِي أَكْثَرَ مِنْ بَقِيَّةِ آلِ فِرْعَوْنَ، فَقَالَ الرَّبُّ تَعَالَى: مَا أَغْرَقْنَاهُ ; فَإِنَّهُ كَانَ لَابِسًا مِثْلَ لِبَاسِكَ، وَالْحَبِيبُ لَا يُعَذِّبُ مَنْ كَانَ عَلَى صُورَةِ الْحَبِيبِ،.{مرقاة 8\155}
পোশাক-আশাক ইত্যাদিতে যে নিজেকে কোন কাফির, ফাসিক-ফুজ্জার, নেককার, সলিহীনদের সাথে মিলাবে সে সে জাতির অন্তর্ভূক্ত হবে। (পোশাক-আশাক ইত্যাদিতে ফাসিক-ফুজ্জার, কাফিরের সাথে মিলালে তাদের মধ্যে গণ্য হবে, নেককারদের সাথে মিলালে তাদের মধ্যে গণ্য হবে অর্থাৎ নেকি বদীতে তাদের মধ্যে গণ্য হবে।)
যখন আল্লাহ তায়ালা ফেরাউন ও তার দলবলকে ডুবিয়ে দিলেন তখন ঐ দলের একজনকে ডুবাননি। (ঐ লোকটি ছিল ফেরাউনের দরবারের ভাঁড়/রগুড়ে লোক) সে মুছা (আ.) এর পোশাক-আশাক, কথা-বার্তা অনুকরণ করে মুছা (আ.) কে ঠাট্টা-বিদ্রুপ করত। তার এই কর্ম-কান্ডে ফেরাউন ও তার সঙ্গী-সাথীরা হাসি তামাশা করত। হযরত মুছা (আ.) তাঁর রবের কাছে মিনতি করে বললেন, এই ব্যক্তিতো অন্যান্যদের চেয়ে আমাকে বেশি কষ্ট দিত। আল্লাহ তায়ালা বললেন, আমি তাকে ডুবিয়ে মারবো না। কারণ সে তোমার মত পোশাক পরত। হাবীব তার আকৃতি ধারণকারীকে কষ্ট দেন না। (মিরকাতুল মাফাতিহ, খণ্ড নং ৮, পৃষ্ঠা নং ১৫৫)
তাশরীহ নং ২,
وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم أَنَّهُ قَالَ مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ أَوْ حُشِرَ مَعَهُمْ فَقِيلَ مَنْ تَشَبَّهَ بِهِمْ فِي أَفْعَالِهِمْ وَقِيلَ مَنْ تَشَبَّهَ بِهِمْ فِي هَيْئَاتِهِمْ وَحَسْبُكَ بِهَذَا فَهُوَ مُجْمَلٌ فِي الِاقْتِدَاءِ بهدى من الصَّالِحِينَ عَلَى أَيِّ حَالٍ كَانُوا —وَقَدْ كَانَ التَّخَتُّمُ فِي الْيَمِينِ مُبَاحًا حَسَنًا لِأَنَّهُ قَدْ تَخَتَّمَ بِهِ جَمَاعَةٌ مِنَ السَّلَفِ فِي الْيَمِينِ كَمَا تَخَتَّمَ مِنْهُمْ جَمَاعَةٌ فِي الشَّمَالِ وَقَدْ رُوِيَ عَنِ النَّبِيِّ صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وسلم الْوَجْهَانِ جَمِيعًا فَلَمَّا غَلَبَتِ الرَّوَافِضُ عَلَى التَّخَتُّمِ فِي الْيَمِينِ وَلَمْ يَخْلِطُوا بِهِ غَيْرَهُ كَرِهَهُ الْعُلَمَاءُ مُنَابَذَةً لَهُمْ وَكَرَاهِيَةً لِلتَّشَبُّهِ بِهِمْ لَا أَنَّهُ حَرَامٌ وَلَا أَنَّهُ مَكْرُوهٌ وَبِاللَّهِ التَّوْفِيقُ {التمهيد لما فى المؤطأ من المعانى والأسانيد 6\80}
যে যে জাতির সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে সে জাতির অন্তর্ভূক্ত হবে অর্থাৎ তাদের সাথে তার হাশর হবে। কেউ কেউ বলেন যে যে জাতির কর্মপদ্ধতির সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে সে জাতির মধ্যে গণ্য হবে। আবার কেউ কেউ বলেন, যে যে জাতির আকার আকৃতির সাথে সাদৃশ্য রাখবে সে সে জাতির মধ্যে গণ্য হবে।
ডান হাতে আংটি পরা বৈধ ও হাছান। সালফে সালিহীনদের এক জামায়াত ডান হাতে আংটি পরতেন আর এক জামায়াত বাম হাতে আংটি পরতেন। এই উভয় সুরাতটি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম থেকে বর্ণিত আছে। যখন রাফিজী সম্প্রদায় ডান হাতে আংটি পরা শুরু করল এবং তাদের মধ্যে এই প্রচলনটি ব্যাপক হয়ে গেল তখন উলামা হযরতগণ (ঐ সময়ে) ডান হাতে আংটি পরাকে মাকরূহ বিবেচনা করলেন। শুধুমাত্র রাফিজীদের সাথে সাদৃশ্য হওয়ার কারণে। অথচ মূলে ডান হাতে আংটি পরা হারামও নয় মাকরূহও নয়। {التمهيد لما فى المؤطأ من المعانى والأسانيد 6\80}
{বরং তা নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের একটি পবিত্র অভ্যাস। প্যান্ট-শার্ট নবী (স.) এর অভ্যাসের পোশাকও নয় বরং ইউরোপের অমুসলিমদের প্রচলিত পোশাক ও আমাদের উপমহাদেশে ষড়যন্ত্রের এক নির্মম ইতিহাস। হে আল্লাহর রসূল সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাহাব্বাতকারীগণ! এই ক্ষেত্রে প্যান্ট-শার্টের হুকুম কী হতে পারে একবারও কি ভেবে দেখেছেন}
(من تشبه بقوم) ظاهرًا في ملبوسه وهيئته (فهو منهم) معدود إن كانوا من أهل الخير فهو من أهله أو من أهل الشر فكذلك {التنوير شرح الجامع الصغير}
তাশরীহ নং ৩
যে যে জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করবে অর্থাৎ বাহ্যিকভাবে পোশাক-আশাক ও আকার-আকৃতিতে যে যে জাতির সাথে মিল রাখবে সে সে জাতির মধ্যে গণ্য হবে। অর্থাৎ যদি সে শ্রেষ্ঠ জাতির সাথে সাদৃশ্য রাখে তবে সে উত্তম জাতির অন্তর্ভূক্ত হবে আর যদি নিকৃষ্ট জাতির সাথে সাদৃশ্য রাখে তবে সে নিকৃষ্ট জাতির অন্তর্ভূক্ত হবে।
{التنوير شرح الجامع الصغير 10\178}
তাশরীহ নং ৪
(وَعَنْ ابْنِ عُمَرَ – رَضِيَ اللَّهُ عَنْهُمَا – قَالَ: قَالَ رَسُولُ اللَّهِ – صَلَّى اللَّهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ -: «مَنْ تَشَبَّهَ بِقَوْمٍ فَهُوَ مِنْهُمْ» أَخْرَجَهُ أَبُو دَاوُد وَصَحَّحَهُ ابْنُ حِبَّانَ) الْحَدِيثُ فِيهِ ضَعْفٌ وَلَهُ شَوَاهِدُ عِنْدَ جَمَاعَةٍ مِنْ أَئِمَّةِ الْحَدِيثِ عَنْ جَمَاعَةٍ مِنْ الصَّحَابَةِ تُخْرِجُهُ عَنْ الضَّعْفِ، وَمِنْ شَوَاهِدِهِ مَا أَخْرَجَهُ أَبُو يَعْلَى مَرْفُوعًا مِنْ حَدِيثِ ابْنِ مَسْعُودٍ «مَنْ رَضِيَ عَمَلَ قَوْمٍ كَانَ مِنْهُمْ» وَالْحَدِيثُ دَالٌّ عَلَى أَنَّ مَنْ تَشَبَّهَ بِالْفُسَّاقِ كَانَ مِنْهُمْ أَوْ بِالْكُفَّارِ أَوْ بِالْمُبْتَدِعَةِ فِي أَيِّ شَيْءٍ مِمَّا يَخْتَصُّونَ بِهِ مِنْ مَلْبُوسٍ أَوْ مَرْكُوبٍ أَوْ هَيْئَةٍ، {سبل السلام 2\646}
—হযরত আবু ইয়ালা মারফু’ সূত্রে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে মাছউদ (রা.) থেকে বর্ণনা করেন, যে ব্যক্তি কোন জাতির কাজ-কর্মকে পছন্দ করে সে ঐ জাতির মধ্যে গণ্য হবে। এই হাদীছ থেকে প্রমাণিত হয় যে, (অনুসরণের) যে কোন দিক দিয়ে কেউ কোন ফাছিক অথবা কাফির অথবা বিদয়াতীর অনুসরণ করে সে সেই জাতির মধ্যে গণ্য হবে চাই সে অনুসরণ পোশাকের মধ্যে হোক, জুতার মধ্যে হোক বা অন্য কোন আকার-আকৃতির মধ্যে হোক। (ছুবুলাস সালাম, ২য় খণ্ড, পৃষ্ঠা নং ৬৪৬)
হযরত আবু দাউদ (র.) হাদীছটি “পোশাকের অধ্যায়ে” লিপিবদ্ধ করেছেন। বোঝা যায় পোশাকের ব্যাপারে অনুকরণ-অনুসরণের বিশেষ একটি “দিক” নিহিত রয়েছে। ইছলাম গ্রহণ করলে ভৌগলিক, আঞ্চলিক, আবহাওয়া ইত্যাদির উর্দ্ধে উঠে বিশেষ ঐ “দিকটিকে” অনুসরণ করতে হয়।
একটি ধারণা, একটি কথা ও একটি নিবেদনঃ
অনেকে বলে থাকেন লম্বা জামা, টুপি-পাগড়ি এই উপমহাদেশের পোশাক নয়। কাজেই উপমহাদেশের আদি পোশাক পরিবর্তণ করে লম্বা জামা, টুপি, পাগড়ি ব্যবহার করা যেমন, উপমহাদেশের পোশাক পরিবর্তণ করে প্যান্ট-শার্ট ব্যবহার করাও তেমন। কথাটা পক্ষপাতদুষ্ট। কথাতো এটাও হতে পারে সরাসরি উপমহাদেশের আদি পোশাক চালু করা যাক। অপরের অনুসরণ করার কোন প্রয়োজন নেই। আর যদি অপর থেকে অনুসরণ করতেই হয় তবে ইউরোপ লণ্ডনের পোশাক গ্রহণ না করে মাদীনাওয়ালার পোশাক গ্রহণ করলে অসুবিধা কোথায়? এটাতো স্বাভাবিক, যে যাকে ভালোবাসবে সে তারই অনুসরণ করবে। যদি কেউ লণ্ডনকে ভালোবাসে তবে সে লণ্ডনওয়ালার চাল-চলন, পোশাক-আশাক, কৃষ্টি কালচার ভালোবাসবে। আর যদি কেউ মাদীনাকে ভালোবাসে তবে সে মাদীনা ওয়ালার চাল-চলন, পোশাক-আশাক, কৃষ্টি কালচার ভালোবাসবে। এখানে মাসআলা খোঁজার তো কোন প্রয়োজন হবে না। আরব-অনারব যে সকল সাহাবা (রা.) নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে দেখেছেন তারা পোশাকসহ সকল বিষয়ে সরাসরি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ করেছেন। তাদের দেখাদেখি তাবিয়ীনগণ, তাদের দেখাদেখি তৎপরবর্তীগণ এবং তাদের দেখাদেখি তৎপরবর্তীগণ। এভাবে বর্তমান পর্যন্ত। কাজেই বলা যায়, যারাই নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে অনুসরণ করেছেন তারাই এই পোশাক পরিধান করেছেন ভবিষ্যতেও অনুসরণ তথা পরিধান করবেন ইনশাআল্লাহ। অন্যদিকে যারা পশ্চিমাদের অনুসরণ করেছেন বা তাদের সংস্পর্শ গ্রহণ করেছেন তারা তাদের প্রচারিত বা প্রসারিত পোশাকের দিকে ঝুকে গেছেন। সর্বোপরি ইছলাম গ্রহণ করার সাথে সাথে মুসলিম হিসাবে সার্বিক দিক দিয়ে তাকে অপর জাতির সাদৃশ্য অবলম্বন করা থেকে অবশ্যই বিরত থাকতে হয়।
লম্বা জামা, টুপি–পাগড়ি কি আসলে আরবদের পোশাক নাকি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পোশাক? একটু চিন্তা করবেন কি?
নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম সকল ভূ-খণ্ডের নবী, বিশ্ব নবী, শেষ নবী। জন্মতো কোন এক এলাকায় হবে। তিনি আরবে জন্ম গ্রহণ করেছেন। তাই বলে তিনি শুধু আরবদের জন্য নবী নন, শুধুমাত্র আরবদের জন্য উত্তম নমুনা নন বরং বিশ্ব নবী, সমগ্র বিশ্ববাসীর জন্য উত্তম নমুনা।
পোশাকের বিষয়ে বলা যায় যে, মানুষ পোশাক গ্রহণ করেছে পরিবেশ-পরিস্থিতি, আবহাওয়া, ধর্মীয়, রাজনৈতিক ইত্যাদি বিবেচনায়। ধর্মীয়, রাজনৈতিক, পরিবেশ-পরিস্থিতি, আবহাওয়া, সময়ের পরিবর্তনে মানুষের যেমন রুচিবোধের মধ্যে পরিবর্তণ এসেছে তেমন পোশাকের স্টাইলের মধ্যেও পরিবর্তণ এসেছে। মনে হয় আগামীতেও এমন ধরনের পরিবর্তণ অব্যাহত থাকবে। কিন্তু রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম একবার যে পোশাক গ্রহণ করেছেন পরিবেশ-পরিস্থিতি, যুগ-যামানা, এক কথায় স্থান, কাল, পাত্র যতই পরিবর্তণ হোক ঐ পোশাকের কোন একটা কাইফিয়াত পরিবর্তণ হবে না। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পোশাক স্থান, কাল, পাত্রের গণ্ডী দ্বারা সীমাবদ্ধ নয়। কোন কিছুর পরিবেশ-পরিস্থিতি, যুগ-যামানা, ধর্মীয়-রাজনৈতিক, ব্যক্তি রুচিবোধ যতই পরিবর্তণ হোক না কেন তিনি যে পোশাক ব্যবহার করেছেন সেটাই সব যামানায় “লিবাছুর রসূল” অর্থাৎ রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পোশাক। হাদীছ সংকলকগণ তাদের সংকলিত হাদীছের কিতাবের মধ্যে “রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পোশাক” বলে শিরোনাম কায়েম করেছেন।
বর্তমানে যেভাবে বোঝানো হচ্ছে যে, তিনি আরবী তাই তিনি (স.) এই পোশাকগুলো আরাবীয় প্রথা থেকে পেয়েছেন। হাদীছ সংকলকগণ মনে হয় এমন ধারণা নিয়ে বিষয়টি বোঝেননি। যদি তারা বর্তমানের এই ধারণাটি বুঝতেন তাহলে মনে হয় এই পোশাকগুলোর নাম “লিবাছুল আরব” রাখতেন। ইমাম বুখারী (র.), ইমাম তিরমিযী (র.) সহ অন্যান্য হাদীছের ইমামগণ “রসুলের (স.) পোশাক-পরিচ্ছদ” শিরোনামে উল্লেখ করায় বোঝা যায় যে, তারাও স্বীকার করতেন, যে পোশাক একবার রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করেছেন সেটা আরবের প্রচলিত বা প্রথার পোশাক হলেও তার নাম আর “আরবের পোশাক” থাকে না, তার নাম হয় “রসূলের (স.) পোশাক”।
একথা স্বতঃসিদ্ধ যে, রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের বিশেষ পোশাক ছিল। এই আলোচনার পর বিচার্জ্য বিষয় হল, আরবে প্রচলিত পোশাকগুলো ব্যবহার করার পর বিশেষ ঐ পোশাকগুলোকে কি নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পোশাক বলা হবে? না আরবের পোশাক বলা হবে? পুনঃ পুনঃ উল্লেখ করতে হয়, কোন পোশাক আরবে চালু ছিল। নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ঐ পোশাক পছন্দ করেছেন বা পরিধান করেছেন। এখন এই পোশাককে আরবের পোশাক বলা হবে না। বরং তার নাম পরিবর্তন হয়ে যাবে। এটাকে বলা হবে“নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের পোশাক বা তাঁর (স.) প্রিয় পোশাক”। যেমন ক্বমীস।
বিশেষ কথাঃ লম্বা জামা, টুপি-পাগড়ি রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম ব্যবহার করেছেন। এই দিকে লক্ষ্য রেখে কেউ যদি লম্বা জামা, টুপি-পাগড়ি ব্যবহার করেন, তবে তাকে কি “আরবী পোশাক পরিধানকারী বলা হবে, না রসূলের (স.) পোশাক পরিধানকারী বলা হবে”? অপরদিকে কেউ যদি প্যান্ট-শার্ট ব্যবহার করেন তবে তাকে কি বলা হবে? রসূলের (স.) পোশাক পরিধানকারী বলা হবে, না ইউরোপের পোশাক পরিধানকারী বলা হবে? একজন রসূল প্রেমিক হয়ে, নবী (স.) এর সুন্নাত প্রতিষ্ঠাকারী হয়ে কোনটাকে অগ্রাধিকার দেওয়া উচিত নিজেকেই প্রশ্ন করি।
আরবীয় পোশাক বনাম নবী (স.) এর পোশাকঃ
আহলে মাক্কাদের পোশাক কি নবী কারীম (স.) ও সাহাবাগণ (রা.) হুবহু গ্রহণ করেছেন?
আহলে মাক্কাদের পোশাক নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হুবহু গ্রহণ করেননি। বরং তদানিন্তন প্রত্যেকটি পোশাকের মধ্যে কুরআন ও হাদীছের আলোকে পরিমার্জণ ও সংশোধন করে নিয়েছেন। হুবহু ঐ পোশাকগুলো গ্রহণ করা হলে বোঝা যেত ইছলামে পোশাকের ক্ষেত্রে কোন ধরা-বাঁধা নিয়ম নেই বরং তা আবহাওয়া, পরিবেশ ও রুচি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত একটি বিষয়। কিন্তু পরিমার্জন, পরিবর্ধণ ও সংশোধন করা হলে বুঝতে হবে পোশাক আবহাওয়া, পরিবেশ ও রুচি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত ও পরিচালিত কোন বিষয় নয়। বরং তা দ্বীনের অন্তর্ভূক্ত বিষয় যা একটি অভিব্যক্তি বা দর্পণ, যার দ্বারা কোন জাতীর অভিরুচি জানা যায়।
আহলে মাক্কার কোন্ পোশাককে ইছলাম কিভাবে গ্রহণ করেছে?
ক্বমীসঃ প্রাক ইছলামী যুগে মাক্কার অধিবাসীগণ ছোট-বড়, নারী-পুরুষ সকলেই এই পোশাকটি ব্যবহার করতেন। ক্বমীস দুই প্রকারের ছিল। এক প্রকার ক্বমীস যা দ্বারা পুরা শরীর আবৃত করা যেত আরেকটি একটু খাঁটো ছিল যা দ্বারা আংশিক শরীরকে আবৃত করা যেত।
ইছলাম আবির্ভূত হলে এই পোশাকটি বহাল রাখা হয়েছিল। পার্থক্য ছিল পুরুষেরা যে ক্বামীসটি ব্যবহার করত আর ঝুল ছিল নিসফে সাক পর্যন্ত আর মহিলারা যেটা ব্যবহার করত সেটার ঝুল ছিল মাথা থেকে পা পর্যন্ত। যেটাকে বর্তমানে যিলবাব বলা যেতে পারে। যিলবাবের আরেকটি প্রকার হল, যিলবাব ক্বমীসের সাথে একটি অতিরিক্ত পোশাক যেটা মাথার দিক হতে ছেড়ে দেওয়া হত। এটা মুখমণ্ডলকে আবৃত করে রাখত।
বোঝা গেল ক্বমীছ পূর্বে ছিল। ইছলামী যুগে এই নামটিকে বহাল রাখা হয় কিন্তু তার বৈশিষ্ট্য পরিবর্তণ করা হয়। কাজেই ক্বমীস বললেই জাহিলী যুগের ঐ ক্বমীস বোঝাটা ভুল।
বুরদাঃ এমন পোশাক যা দ্বারা পুরা শরীর আবৃত থাকে। আহলে মাক্কাগণ ইছলাম আসার আগেও এটা ব্যবহার করত। এটাকে বর্তমানে গাউন বলা যেতে পারে। ইছলাম কিছু শর্ত সাপেক্ষে এই পোশাকটির অনুমোদন দেয়। প্রাক ইছলামী যুগে এটা অহংকারী পোশাক হিসাবেই ব্যবহৃত হত। ইছলাম এটাকে সংশোধন করে। এর কয়েকটা প্রকার ছিল। যেমন, যানিবী বুরদা, সিরা ইত্যাদি।
হিবরাঃ এটা মূলতঃ বুরদারই একটা প্রকার।
দিবাজঃ রেশম অথবা পশম অথবা তুলার তৈরী এক বিশেষ প্রকার পোশাক।
খমীছঃ পশমী অথবা রেশমের তৈরী এক প্রকার পোশাক যার রং ছিল কালো ও হলুদ। তবে হলুদের প্রভাব ছিল বেশি।
এছাড়া আরো কিছু পোশাক ব্যবহৃত হত যেগুলোর বিভিন্ন নামকরণ আছে বটে তবে সেগুলো বর্তমানের পোশাকের সাথে মিলানোটা বড় কষ্টকর। যেমন, মিতরাফ, মিলাআ’, মিলহাফা ইত্যাদি।
যাইহোক মূল বিষয়টা হল, তদানিন্তন সময়ে যে পোশাকগুলো ব্যবহৃত হত সেই নামের অনেকটা পোশাক বর্তমানে আছে। ইছলাম তার মধ্যে যেগুলোর অনুমোদন দিয়েছে সেগুলো সবটাই শর্তযুক্ত। আহলে মাক্কাদের পোশাক ছিল শর্তমুক্ত। কী দিয়ে তৈরী, শরীরের কতটুকু আবৃত করবে অর্থাৎ লম্বা, চওড়া, ঝুল কেমন হবে এগুলোর কোন বিধিনিষেধ ছিল না। নারী-পুরুষের পোশাকের মধ্যেও কোন প্রভেদ ছিল না। নারী-পুরুষ সবাই ইচ্ছামত তা ব্যবহার করতে পারত। যখন ইছলাম এগুলোর মধ্যে শর্ত যোগ করে দেয় তখন শর্তযুক্ত হওয়ার পর এই পোশাকগুলোর নাম যদিও আহলে মাক্কাদের পোশাকের নামে ছিল কিন্তু ইছলাম কর্তৃক পরিমার্জিত ও সংশেধিত এই পোশাক দ্বারা আহলে মাক্কাদের পোশাক বোঝানোর পথ রুদ্ধ হয়ে যায়। যদি হুবহু তাদের পোশাক ইছলাম গ্রহণ করত তবে একথা বলা যেত যে, আবহাওয়া ও ভৌগলিক অবস্থানের কারণেই পোশাক নির্ধারণ করা হয়। কিন্তু যেহেতু ইছলাম এখানে পরিমার্জণ করেছে কাজেই একথা বলতেই হবে যে, পোশাক আবহাওয়া বা ভৌগলিক কারণে নির্ধারিত হয়নি বরং তার জন্য মুখাপেক্ষি হতে হয়েছে ইছলামী নির্ধারণীর। আর “ইছলাম শর্তাদি” যোগ হওয়ার পর এই পোশাকগুলোকে আর আবহাওয়া, স্থানীয় বা ভৌগলিক পোশাক বলা যাবে না। বরং বলতে হবে “ইছলামিক পোশাক”। তবে এই “ইছলামিক পোশাক” শরয়ী পরিভাষায় ফরয, ওয়াজিব, সুন্নাত, মুস্তাহাব বলা হবে কিনা সেটা একটা স্বতন্ত্র বিষয়।
পোষাক সম্পর্কে কড়াকড়ি কেন? অনেকে বলে থাকেন“পোশাক একটা অনুসরণ করলেই হয়”পোশাকের ব্যাপারে বাড়াবাড়ি করা ঠিক নয়। এখানে কয়েকটি বিষয় বিবেচনার আছে।
(ক) আমরা ধারণাকৃত এই যুক্তির পক্ষেও বলছি না আবার বিপক্ষেও বলছি না। শুধু একটা কথা নিবেদন করছি মাত্র। এই দাবী অনুযায়ি পোশাকের যেহেতু কোন বাধ্যবাধকতা নেই সেহেতু পশ্চিমাদের অনুসরণ না করে মাদীনার অনুসরণ করলে সেটা কি একটু বেশি মানানসই হত না? অন্তত নবী কারীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের মাহাব্বাতকারী হিসাবে!!!
(খ) পোশাক সম্পর্কে হযরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাছ (রা.) এর একটি উক্তির সাধারণ অর্থ গ্রহণ করায় সম্ভবতঃ এই জটিলতার সৃষ্টি হয়েছে। আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাছ (রা.) বলেন, “পরিধান কর ইচ্ছামত”। বাহ্যিকভাবে এর অর্থ হল পোশাক একটা হলেই হয়। কাজেই মন যা চায় তাই পরিধান কর।
মনে রাখতে হবে এখানে যা মন চায় তাই পরিধান করার নাম “ইচ্ছামত” নয়। যেমন বন্ধনমুক্ত হয়ে যা ইচ্ছা তাই করার নাম স্বাধীনতা নয়। যাকে ইচ্ছা তাকে মারা হল, মন চাইল বলে ডাকাতি রাহাজানি, সন্ত্রাস করা হল। এর সংগঠককে কিছু বলা হলে সে বলল, আমিতো স্বাধীন। আমি যদি স্বাধীনভাবে সব কিছু করতে না পারি তবে স্বাধীন হলাম কেমন করে? আসলে এভাবে স্বাধীনতা নিয়ে ইচ্ছামত কাজ করার নাম কি স্বাধীন? বরং দেশের আইন অনুযায়ী যতটুকু অধিকার কোন ব্যক্তিকে দেওয়া হয়েছে ঐ অধিকারটুকু বন্ধনমুক্ত হয়ে উপভোগ করার নাম স্বাধীনতা। ঈদ মানে খুশি তাই বলে মন যেটাতে খুশি তাই করার নাম খুশি নয়। বরং শরীয়তের সীমার মধ্যে থেকে শরীয়ত যতটুকু অনুমোদন দেয় ততটুকু গ্রহণ করে খুশি হওয়া বা প্রকাশ করার নাম ঈদ বা খুশি। মন চায় ঈদের দিনে আতশবাজি, রঙবাজি, গান-বাজনা, কৌতুক, খেলাধুলা, বেপর্দা ঘুরে বেড়াতে। এর প্রত্যেকটি মনের খুশির জন্য করা হলে তাকে ঈদ বলা হবে না। বরং দেখতে হবে “খুশি” কথাটির শরয়ী মানদণ্ড কী? নবী কারীম (স.) সাহাবাদের (রা.) কি ধরনের খুশি শিখিয়েছেন আর তাঁদের (রা.) দেখাদেখি পর্যায়ক্রমে সাহাপ্রেমিক মানুষগুলো কিভাবে ঈদের খুশি শব্দটি বুঝেছেন বা পালন করেছেন। ইছলাম শিখিয়েছে মানুষের আনন্দ-উদ্দীপণা হবে এই দিকে লক্ষ্য করেঃ
صِبْغَةَ اللَّهِ وَمَنْ أَحْسَنُ مِنَ اللَّهِ صِبْغَةً وَنَحْنُ لَهُ عَابِدُونَ (البقرة 138)
قُلْ إِنَّ صَلَاتِي وَنُسُكِي وَمَحْيَايَ وَمَمَاتِي لِلَّهِ رَبِّ الْعَالَمِينَ (الأنعام 162)
পোশাকের ক্ষেত্রেও একই কথা প্রযোজ্য। “ইচ্ছামত পরো” নিয়ন্ত্রিত হবে ইছলামের বিধি-বিধান তথা মেজাজের দিকে লক্ষ্য করে। “ইচ্ছামত পরো” দ্বারা যদি শরীয়তের দিকে না তাকিয়ে আমাদের ইচ্ছার উপর পরিধান করা বুঝাত তবে পোশাকের উপর ইছলাম কোন শর্ত আরোপ করত না। অথচ বিষয়টি সম্পূর্ণ বিপরীত। ইছলাম শর্তারোপ করেছে কোন কাপড় পরতে হবে, কতটুকু ঝুলিয়ে পরতে, কিসের তৈরী পোশাক ব্যবহার করা যাবে কিসের তৈরী ব্যবহার কা যাবে না, অপর জাতীর সাদৃশ্যের দিকে কতটুকু খেয়াল রাখতে হবে, পোশাক বিনয় প্রকাশক হবে কিনা ইত্যাদি ইত্যাদি। প্রকৃতপক্ষে “ইচ্ছামত পরিধান করো” এর অর্থ হবেঃ শরীয়তের শর্তের অধীনে উত্তীর্ণ পোশঅকগুলো ইচ্ছামত পরিধান করো।
(গ) পোশাকের ব্যাপারে আল্লাহ তায়ালা বলেছেন রীশা”(অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার পোশাক) এই আয়াত থেকে অনেকে বলে থাকেন, পোশাকতো সৌন্দর্য অর্থাৎ সাজ সজ্জার জন্য। কাজেই যেটাতে সৌন্দয প্রকাশিত হয় সেটাই রীশা। অতএব এই ক্ষেত্রে কোন ধরা বাধা নিয়ম নেই। যে পোশাকে সৌন্দয প্রকাশিত হয় সেটাই কুরআন নির্দেশিত পোশাক, সেটাই ইছলামী পোশাক। এর পক্ষে তারা আরো একটি আয়াত যোগ করেন, قُلْ مَنْ حَرَّمَ زِينَةَ اللَّهِ الَّتِي أَخْرَجَ لِعِبَادِه অর্থাৎ আপনি বলুন, আল্লাহর সাজ সজ্জাকে, যা তিনি বান্দার জন্য সৃষ্টি করেছেন (তা) কে হারাম করেছে? (সূরা আরাফ, আয়াত নং ৩২)
আমাদের কথাঃ আল্লাহ তায়ালা বলেন,
يَا بَنِي آَدَمَ قَدْ أَنْزَلْنَا عَلَيْكُمْ لِبَاسًا يُوَارِي سَوْآَتِكُمْ وَرِيشًا
হে বনী আদম, আমি তোমাদের জন্য পোশাক অবতীর্ণ করেছি, যা তোমাদের লজ্জাস্থান আবৃত করে এবং অবতীর্ণ করেছি সাজ সজ্জার বস্ত্র। (সূরা আরাফ, আয়াত নং ২৬)
يا بني آدم قد جعلنا لكم لباسًا يستر عوراتكم، وهو لباس الضرورة، ولباسًا للزينة والتجمل (الميسر)
হে বনী আদম, আমি তোমাদের জন্য নির্ধারণ করেছি পোশাক যা, (১) তোমাদের লজ্জাস্থানকে আবৃত করে। এটাই আবশ্যকীয় পোশাক, (২) সে পোশাক সৌন্দয ও সাজ সজ্জার জন্য। (তাফছীরে মুয়াচ্ছার)
এই সৌন্দয কথাটি বিভিন্ন অর্থে ব্যবহৃত হতে পারে। ইছলামী মানসিকতার ব্যক্তির কাছে এর অর্থ হলঃ যেটাকে সুন্নাতি পোশাক বলা হয় অর্থাৎ আলেমকুলের পোশাক। একজন চলচিত্রজগতের লোকের কাছে এর অর্থ হল ঐ পোশাক যেটা যৌন আবেদন জাগাতে সক্ষম বা নায়ক-নায়িকার দেহের সৌন্দয প্রকাশের পোশাক অথবা চলচিত্রের পারিপার্শিকতা অনুযায়ী মানানসই নায়ক-নায়িকার দেহবয়াব প্রকাশ করার পোশাক। এমনভাবে একেক শ্রেণির লোকের কাছে একেক রকম সংগা। প্রশ্ন হল আমাদেরকে কোন সংগাটি গ্রহণ করতে হবে? একজন মুসলমান যার মূল উদ্দেশ্য আল্লাহর সন্তুষ্টি, তিনি চাইবেন পোশাকের ক্ষেত্রে ঐ সৌন্দযকে গ্রহণ করতে যে সংগা গ্রহণ করলে আল্লাহর কাছে সৌন্দয বিবেচিত হবে। আল্লাহ ভালোবাসবেন। সৌন্দয ও ভালোবাসার ঠিকানা পেতে সে কুরআনের দিকে তাকাবে। আর সেখানে সে পেয়ে যাবে লাক্বদ কানা লাকুম। সেই হিসাবে সে সুন্নাত মুস্তাহাবের দিকে না তাকিয়ে দেখবেন উসয়ায়ে হাছানার দিকে। পোশাকের ক্ষেত্রেও তিনি এই কাজটি করতে ভুলবেন না।
কেন তারা শার্ট পরেন না/লণ্ডন না মাদীনা?
يَا بَنِي آَدَمَ لَا يَفْتِنَنَّكُمُ الشَّيْطَانُ كَمَا أَخْرَجَ أَبَوَيْكُمْ مِنَ الْجَنَّةِ يَنْزِعُ عَنْهُمَا لِبَاسَهُمَا لِيُرِيَهُمَا سَوْآَتِهِمَا إِنَّهُ يَرَاكُمْ هُوَ وَقَبِيلُهُ مِنْ حَيْثُ لَا تَرَوْنَهُمْ إِنَّا جَعَلْنَا الشَّيَاطِينَ أَوْلِيَاءَ لِلَّذِينَ لَا يُؤْمِنُونَ (27)
{ وريشاً } : لباس الزينة والحاجة .
{ يواري سوءاتكم } : يستر عوراتكم .
{ لباس التقوى } : خير في حفظ العورات والأجسام والعقول والأخلاق .— ايسر التفاسير
{ يا بني آدَمَ قَدْ أَنزَلْنَا عَلَيْكُمْ } خلقنا لكم وأعطيناكم { لِبَاساً } يعني ثياب القطن وغيره من الصوف والشعر { يُوَارِي } يغطي { سَوْءَاتِكُمْ } عوراتكم من العري { وَرِيشاً } مالاً ومتاعاً يعني آلة البيت { وَلِبَاسُ التقوى } لباس التوحيد والعفة { ذلك } يعني لباس العفة { خَيْرٌ } من لباس القطن { ذلك } يعني لباس القطن { مِنْ آيَاتِ الله } من عجائب الله { لَعَلَّهُمْ يَذَّكَّرُونَ } لكي يتعظوا [ابن عباس]
«الْبَذَاذَةُ مِنَ الإِيمَانِ» (أخرجه أبو داود، وابن ماجة، وصحَّحه الحافظ ابن حجر في (فتح الباري): [10/368]). و(البَذَاذَةُ): هي التّواضع في اللّباس ورثاثة الهيئة، وترك الزّينة، والرّضا بالدّون من الثّياب .
4161 – حَدَّثَنَا النُّفَيْلِيُّ، حَدَّثَنَا مُحَمَّدُ بْنُ سَلَمَةَ، عَنْ مُحَمَّدِ بْنِ إِسْحَاقَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ أَبِي أُمَامَةَ، عَنْ عَبْدِ اللَّهِ بْنِ كَعْبِ بْنِ مَالِكٍ، عَنْ أَبِي أُمَامَةَ، قَالَ: ذَكَرَ أَصْحَابُ رَسُولِ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ يَوْمًا عِنْدَهُ الدُّنْيَا، فَقَالَ رَسُولُ اللَّهِ صَلَّى اللهُ عَلَيْهِ وَسَلَّمَ: «أَلَا تَسْمَعُونَ، أَلَا تَسْمَعُونَ، إِنَّ الْبَذَاذَةَ مِنَ الْإِيمَانِ، إِنَّ الْبَذَاذَةَ [ص:76] مِنَ الْإِيمَانِ» يَعْنِي التَّقَحُّلَ. قَالَ أَبُو دَاوُدَ: «هُوَ أَبُو أُمَامَةَ بْنُ ثَعْلَبَةَ الْأَنْصَارِيُّ» — ابو داود
[حكم الألباني] : صحيح
হযরত আবু উমামা (রা.) থেকে বর্ণিত তিনি বলেন, একটা রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের (কিছু) সাহাবাগণ (রা.) তাঁর সামনে দুনিয়াদারী সম্পর্কে আলোচনা করছিলেন। রসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বললেন, তোমরা কি শুনতে পাও না” তোমারা কি শুনতে পাওনা যে, পোশাক-পরিচ্ছদে নম্রতা প্রকাশ ঈমানের অঙ্গ, পোশাক-পরিচ্ছদে নম্রতা প্রকাশ ঈমানের অঙ্গ অর্থাৎ পোশাক-পরিচ্ছদে বাবুগিরি প্রকাশ না করা। (আবু দাউদ শরীফ, হাদীছ নং ৪১৬১)
আলবানীর তাহকীকঃ হাদীছটি সহীহ।
(চলবে ইনশাআল্লাহ)